শারমিন আকতার:
শ্রান্ত দুপুর পরিশ্রান্ত। যে যার কাজে ব্যস্ত। দখিনা হাওয়ার এক চিলতে রেশ আমের মুকুলে দোলা দেয়। চড়ইগুলো এদিক ওদিক তাকায় বিশুদ্ধতার খোঁজে। আকাশে উড়ে বেড়ানো একঝাঁক পাখির দল বাড়ি ফেরার তাড়া করছে। কিছু এখনও উড়ে বেড়ায় নিশ্চুপ নির্ভাবনায়। এমন সময় নীল আকাশ কেমন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে। মনে হয় এই বুঝি সন্ধ্যা নেমে এল। সবাই যে যার মতো ব্যাতিব্যস্ত হয়ে ছুটছে চারদিক নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। একটু পরেই যে অঝোর ধারায় ঝুম বৃষ্টি নামবে।
বসন্ত বাতাস খানিক আগে হিমেল হাওয়ায় রূপ নিয়েছে। তাই কারো ঘরের খোলা জানালা বন্ধের তোড়জোড়। আবার কেউ বারান্দায় বৃষ্টি বন্দনার প্রতিক্ষায়। কবি তার হেয়ালি মনের প্রশ্রয়ে ল্যাপটপের খালি পৃষ্ঠা খুলে আকাশের দিয়ে আছে তাকিয়ে; কখন টুপ করে পড়বে কাব্য; আর কখন শুনবে তার ঝুমঝুমানি শব্দ। একপাশে লুকিয়ে থাকা ছেঁড়া কাগজগুলো হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে মাটি ছুঁই ছুঁই করছে। কিছুতেই অবাধ্য বাতাস তাদের নামতে দেয় না। আকাশ ছোঁয়ার চেষ্টায় রত উঁচু দালানগুলোর দেয়ালবিহীন খোলা ঘর থেকে জমে থাকা ধুলোবালিরা হঠাৎ ঘূর্ণিপাকের খপ্পরে পড়ে এদিকসেদিক ধুলো ছিটিয়ে দিচ্ছে।
কই, বেলা তো পড়ে এল। এখন সত্যি সত্যি সন্ধ্যে নামার যোগাড়। কিন্তু আকাশ থেকে দরাজ কন্ঠে নামছে না কেন সেই সৃষ্টিছাড়া বৃষ্টির দল। আকাশ এখন পরিপূর্ণ নিলাম্বরী রঙে সেজেছে। সবার প্রতিক্ষা বেড়ে আশাহত হতে চলেছে। বৃষ্টির দেখা কই। তাহলে আসবে বলে সে এল না কেন?